ভারত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হতাশার কারণ

ban-ind-cricket-57

ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ২০২৩ এ ভাল কিছুর প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশের। সেই প্রত্যাশা পূরনতো হলই না, উল্টো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স ধরা হচ্ছে এটিকে। অথচ ২০২৩ সালটা ওডিআই ক্রিকেটে ভালই কাটিয়েছিল বাংলাদেশ। তাছাড়া ক্রিকেটের তিন ফর‌ম্যাটের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ফরম্যাট ধরা হচ্ছিল ওয়ানডেকেই। ভারত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হতাশার কারণগুলো খোঁজ চলছে।

ঠিক কি কারনে এমন হতশ্রী পারফরম্যান্স তার সঠিক ব্যাখা নেই ক্রিকেট বোর্ড সহ ক্রিকেটারদের কাছেও। ভারতীয় কন্ডিশনে যেখানে প্রায় সবদলই ৩৫০ রানকে সহজ বানিয়ে ফেলেছে সেখানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৩০৬ তাও শেষ ম্যাচে। ৩৫০ রান করা তো দুরের কথা এবারের বিশ্বকাপে মাঠে ৫০ ওভার টিকে থাকাই যেন বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল।

বাংলাদেশের বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে দল সিলেকশন থেকে শুরু করে খেলোয়াড় বাছাই সব কিছুই ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। হাথুরুসিংহেকে কোচিং প্যানেলে নিয়ে আসার পর থেকেই দল নিয়ে অনেক নাড়া চাড়া করা হয়। বিশ্বকাপ অধিনায়ক হিসেবে তামিম ইকবালকে নিয়ে বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণার কথা ছিল।সেই তামিমকে অধিনায়ক করা তো দুরের কথা বিশ্বকাপ স্কোয়াডেই রাখা যায়নি যার নৈপথ্যে ছিল হাথুরিসিংহে আর সাকিব আল হাসান।

তামিমের ইনজুরি ইস্যুকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যে তামিমকে দলে রাখা যায়নি। তামিমকে দল থেকে বাদ দেয়ার অন্যতম প্ল্যানটা করেছিলেন হাথুরুসিংহে। ব্যক্তিগত ভাবে তামিমকে পছন্দ করতেন না হাথুরু। সেই দ্বন্দ্বের জের ধরেই আফগানিস্তান শুরুর মাঝেই আকস্মিকভাবে অবসরের ঘোষণা দিয়ে বসেছিলেন তামিম ইকবাল। আর সাকিব আল হাসান অধিনায়কের দায়িত্ব নেয়ার পর হাথুরুসিংহের জন্য তামিমকে না রাখার বিষয়টি সহজ হয়ে যায়।

সাকিব আল হাসান আর হাথুরুসিংহের প্ল্যান নাজমুল হাসান পাপনের সামনে উত্থাপিত হলে তা সাদরে গ্রহন করেন নাজমুল হাসান পাপন। অথচ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অবসর ভেঙ্গে বিশ্বকাপে ফেরার কথা ছিল তামিমের।

তামিমকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক কবে থেকে নেয়া হয়েছিল তা স্পষ্ট না হলেও, তা যে অনেকটা আগে থেকেই ছিল তা ক্রিকেট বোর্ডের কার্যকলাপে ফুটে উঠেছিল। তামিমকে বাদ দিতে লিটনের সঙ্গী খুঁজতে দলে সুযোগ পেয়েছিলেন অনেকে। তাদের মধ্যে ছিলেন মোহাম্মদ নাঈম, এনামুল হক বিজয়, সাইফ হাসাান, মাহুদুল হাসান জয়, তানজিদ হাসান তামিম।

শুধু এই একটি পজিশনে খেলোয়াড় বাছাইয়ের জন্য ইমার্জিং এশিয়া কাপে ৮ জনের ওপেনারকে দিয়েও ম্যাচ খেলানো হয়। সবার ব্যর্থতার পরও শেষ পর্যন্ত তামিমকে না রাখার সিদ্ধান্ত অনড় থাকায় কোন রকম পারফর্ম্যান্স ছাড়াই বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়ে যান তানজিদ হাসান। ফলাফল পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ওপেনিং সহ টপ অর্ডার ব্যর্থ। তামিমের বদলি হিসেবে খেলা তানজিদ হাসানের ৯ ইনিংসে সর্বোচ্চ ইনিংস ৫১ রানের।

তামিম ইকবালের পাশাপাশি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে ও দলে না রাখার সিদ্ধান্ত মোটামুটি নিয়েই ফেলেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। হাথুরুর অপছেন্দর তালিকায় তামিমের পাশাপাশি ছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের নামও। দলে না রাখতে আফগানিস্তান সিরিজ ও এশিয়া কাপেও জায়গা হয়নি রিয়াদের।

মাহমুদুল্লাহকেও দলে না রাখতে ৭ নম্বর পজিশনের জন্য চেষ্টা করা হয় আফিফ হোসেন ধ্রুব, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, সৌম্য সরকারকে দিয়ে। সবার ব্যর্থতার পর তামিমের বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে মাহমুদুল্লাহকে দলে না রেখে রোষানলে পড়েতে চায়নি ম্যানেজমেন্ট। নিউজিল্যান্ডের সাথে সিরিজে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের তুলনামূলক ভাল পারফরম্যান্স ম্যানেজমেন্টেকে অনেকটা প্রেসারে ফেলে তাকে দলে রাখতে। ফলে অনাগ্রহ থাকলেও রিয়াদকে রাখতে বাধ্য হয় সিলেক্টররা।

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দলে অন্তর্ভুক্তি তিনি পারফরম্যান্স দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। যে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে দলে না রাখার সিদ্ধান্ত মোটামুটি চুড়ান্ত ছিল সেই মাহমুদুল্লাহই এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার। অস্মানিত হওয়া রিয়াদের ইনিংসগুলা যেন ছিল বাংলাদেশের সম্মান বাঁচানোর লড়াই।

তামিম আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের পাশাপাশি বাদ দেয়ার পরিকল্পনার তালিকায় ছিল মোস্তাফিজের নামও। তবে মোস্তাফিজ কোন রকম টিকে গেছেন এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত বোলিং আর নিউজিল্যান্ড সিরিজে ভাল বোলিংয়ের কল্যানে।

বাংলাদেশের হতাশার বিশ্বকাপ হওয়ার অন্যতম কারনই মূলত সিনিয়র ক্রিকেটারদের দলে গুরুত্ব না থাকা। যেখানে বিপক্ষ দলগুলো সিনিয়র খেলোয়াড়দের গুরুত্ব দিয়ে দল সাজিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের চিন্তা করেছিল। সেখানে বাংলাদেশই একমাত্র দল যারা নতুন খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তি দিয়ে ভাল কিছু করতে চেয়েছিল। ফলে বাস্তবতার কাছে হেরে বিশ্বকাপে ভরাডুবি ঘটল বাংলাদেশের।

দল গঠনের দুরদর্শীতায়ও দুর্বলতা ছিল বাংলাদেশের। বিশ্বকাপের ঠিক আগের সিরিজেও অনেকে জানতেন না তারা দলে থাকছেন কিনা। যেখানে বিশ্বকাপের মত আসরে খেলতে আগে ভাগেই খেলোয়াড়দের নিজেদের প্রস্তুত করতে দেখা যায়। অথচ বাংলাদেশের উচিত ছিল কমপক্ষে একবছর আগে বিশ্বকাপের দল সাজিয়ে নিয়ে তাদেরকে প্রস্তুত করার সুযোগ দেয়া।

এর বাহিরেও বাংলাদেশের ‍বিশ্বকাপ প্রাক্টিস কন্ডিশন নিয়েও আগে থেকেই প্রশ্ন ছিল। যেখানে ভারতের কন্ডিশনে ব্যাটারদের জন্য ভাল একটা প্লাটফর্ম দাঁড় করানো। সেখানে বাংলাদেশ সারা বছরই প্রাক্টিস করেছে মিরপুরের স্লো কন্ডিশনে। যেখানে ব্যাটারদের করার মত কিছুই ছিল না।

পাশাপাশি, দুর্বলতার জায়গা রয়েছে বাংলাদেশের খেলোয়াড় বের করে নিয়ে আসার পাইপ লাইনে। ঢাকা আর ঢাকার বাহিরে থেকে খেলোয়াড় বের করে নিয়ে আসার জন্য নেই কোন ভাল উদ্দ্যেগ। বিসিবির দুই একটি হাই পারফরম্যান্স ইউনিট আর বিকেএসপি ছাড়া খেলোয়াড় আসার আর কোন মাধ্যমে নেই বাংলাদেশে। স্কুল লেভেল ক্রিকেটেও নেই কোন গুরুত্ব। ফলে বর্তমানের মত সাম্প্রতিক ক্রিকেট ভবিষ্যতেও ভাল কোন আশার আলো দেখছে না বাংলাদেশ।

36 thoughts on “ভারত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হতাশার কারণ

  1. I think everything said made a ton of sense. But, what about this?
    suppose you composed a catchier title? I mean, I don’t wish to tell you how to
    run your blog, however suppose you added a post title that makes people want more?
    I mean ভারত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের
    হতাশার কারণ is kinda boring. You might
    glance at Yahoo’s front page and watch how they create news titles to get viewers to
    click. You might add a video or a related picture or two to
    grab readers interested about everything’ve got to say.
    In my opinion, it would bring your website a little livelier.

  2. Hey there! I understand this is sort of off-topic
    however I needed to ask. Does operating a well-established
    website like yours require a lot of work? I’m completely new to writing a blog but I
    do write in my journal daily. I’d like to start a blog so I will be able to share
    my experience and feelings online. Please let me know if you have any kind of
    recommendations or tips for brand new aspiring bloggers.
    Appreciate it!

  3. Greetings from Colorado! I’m bored at work so I decided to check out your site on my iphone during lunch break.
    I love the info you present here and can’t wait to take a
    look when I get home. I’m shocked at how quick your blog loaded
    on my phone .. I’m not even using WIFI, just 3G .. Anyhow, wonderful blog!

  4. I have been exploring for a little bit for any high quality articles or
    weblog posts on this kind of house . Exploring in Yahoo I at last stumbled upon this site.
    Reading this information So i am happy to convey that I’ve a very excellent
    uncanny feeling I found out exactly what I needed. I
    such a lot indisputably will make certain to do not overlook this website and
    provides it a glance regularly.

  5. Just want to say your article is as surprising. The clarity for your post is simply spectacular and i can think you are an expert on this
    subject. Well along with your permission allow
    me to take hold of your feed to stay up to date with imminent post.
    Thank you 1,000,000 and please keep up the gratifying work.

  6. It’s appropriate time to make a few plans for the longer term
    and it is time to be happy. I have read this submit and if I
    could I desire to counsel you some fascinating issues or
    tips. Maybe you can write next articles relating to this article.
    I desire to learn even more things approximately it!

  7. You are so interesting! I don’t think I have read anything like that
    before. So nice to discover someone with some genuine thoughts on this subject.
    Seriously.. thank you for starting this up. This web site
    is something that is required on the internet, someone with some
    originality!

মন্তব্য করুন