রোহিত-কোহলী ছাড়াই বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টিতে অংশগ্রহন করতে চায় ভারত। তাদেরকে টি-টোয়েন্টিতে বিবেচনায় না রাখতে নানা ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা চলছে। এমনকি বিরাট-কোহলীদের নিয়ে আলাদা ভাবে কথা বলার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে বিসিসিআিই। বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দুজনই ভারতীয় দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত ছিল। ফলে, তাদেরকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভেবে চিন্তে এগোচ্ছে বিসিসিআই।
সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত ফাইনালে খেললেও শিরোপা জয় করতে পারেনি। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে পূরো দেশ বিষাদের সাগরে ডুবে যায়। বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের নেশায় থাকা ভারত, তাই আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে নিজেদের জয়ের ক্ষুধা মিটাতে চাইছে। ফলে, সম্ভাব্য যত ধরনের পদক্ষেপ নিলে কাজটা সহজ হবে তাই করার চেষ্ট চালাচ্ছে তারা।
বিশ্বকাপ জয়ের নেশায় মগ্ন থাকা ভারত, আগামী বিশ্বকাপে রোহিত-কোহলীকে ছাঁটাই করার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়েই ফেলেছে। ঠিক কি ধরনের দল গঠন করলে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন খেতাব অর্জন করা যাবে, সেই প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে রোহিত-কোহলীকে এখন দলের বোঝা মনে হচ্ছে বিসিসিআইয়ের। বিসিসিআই প্রধান রজার বিনি এবং জয় শাহ আকারে ইঙ্গিতে রোহিত-বিরাটদের বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন।
ফলে, অ্যামেরিকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজে হতে চলা বিশ্বকাপে দেখা না যেতে পারে বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা দুজন খেলোয়াড়কে। তবে, এই দুজনকে সরাতে হলে নানা বাধা বিপত্তি অতিক্রম করতে হবে বিসিসিআইকে। পূরো ভারত জুড়ে সবচেয়ে বেশি ক্রিকেট সমর্থক রোহিত-বিরাটের। দলে না রাখার সিদ্ধান্ত নাড়িয়ে দিতে পারে পূরো ভারতকে। এমনকি, চাপ তৈরি হতে পারে রজার বিনি, জয় শাহ সহ পুরো বিসিসিআই ম্যানেজমেন্টকে। এমন পরিস্থিতিতে, মিউজুয়্যাল বোঝাপড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বিসিসিআই।
রোহিত-বিরাটদের বাদ দিয়ে গঠিত দল কেমন করতে পারে তার ট্রায়াল ভার্সনও চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। ঘরের মাঠে হওয়া অস্ট্রেলিয়ার সাথে দুজনকেই বিশ্রাম দেয়া হয়। এমনকি, চলমান দক্ষিণ আফ্রিকা টুরেও বিশ্রামে রাখা হয়েছে এই দুজনকে। অস্ট্রেলিয়ার সাথে হওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফলও পেয়েছে ভারত। রোহিত-কোহলীকে ছাড়াই অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়েছে ভারত। যা বিসিসিআইকে আরো অনুপ্রানিত করেছে এই দুজনকে দলে না রাখার বিষয়ে।
তবে, বিসিসিআইয়ের অনীহা থাকলেও রোহিত-কোহলী চাইছেন অন্তন এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে বিদায় নিতে। রোহিত-কোহলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করাটাও যে বিসিসিআইয়ের দায়িত্ব,সেকথা হয়তো মাথায় আছে বিসিসিআইয়ের। ফলে, এই মূহুর্তে দ্বিমুখী অবস্থানে অবস্থান করছে বিসিসিআই আর রোহিত-কোহলী। যদিও রোহিত বা কোহলী এই বিষয়ে এখনো মুখ খোলেননি।
বেশ কিছুদিন ধরেই বিরাট কোহলীর ব্যাটিং নিয়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে ভারতের।রান পেলেও ঠিক টি-টোয়েন্টি সুলভ হচ্ছে না বিরাট কোহলীর ইনিংসগুলো। তাছাড়া, এই সময়ে এসে বিরাট দলের চেয়ে নিজের রেকর্ডকেই বড় করে দেখছেন বলে অভিযোগ তুলেছে অনেকে। অপরদিকে, বিশ্বকাপের আগে রোহিত শর্মার ব্যাটিংটাও পছন্দ করেননি অনেকে। ফলে, দীর্ঘদিন ধরে জমানো অসন্তুষ্টির বিষ্ফরণ ঘটাতে পারে বিসিসিআই।
তবে, রোহিত-বিরাটদের বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেতে বেশি তাড়াহুড়ো না করারও পরামর্শ অনেকে দিচ্ছেন। ঠিক যেমনটি করা হয়েছিল ক্রিকেট গ্রেট শচীন টেন্ডূলকারের বেলায়। শচীনকে অবসর দিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাড়াহুড়ো করে সিরিজ আয়োজন করেছিল ভারত। যা জুড়ে অনেক ভারতীয় ক্রিকেট বোদ্ধাদের মনে অসন্তুষ্টি আছে। ফলে, একই ধরনের সিদ্ধান্ত যাতে রোহিত-কোহলীর ক্ষেত্রেও ঘটে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে।
অপরদিকে, বিরাট-রোহিতদের অভিজ্ঞতা আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কাজে আসতে পারে বলেও অনেকের মত রয়েছে। ঠিক যতদিন ধরে এই দুই জন ক্রিকেট খেলছেন, বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে তাদের অনুপস্থিতি দলকে ভোগাতেও পাড়ে বলে মত অনেকের। পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেয়ার মত যে ধরনের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন তা এদের দুজনের চেয়ে কেই বা বেশি জানে।
একটি ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিততে না পারার খেসারত এই ভাবে দুজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের উপর আসবে তা হয়তো এখনো কেউ ভাবছে না। এমনতো নয় ভারত ওয়ানডে বিশ্বকাপে বেশি খারাপ করছে যে পরাজয়ের খড়ঙ্গ তাদের গায়ে বাজতে পারে। তবে, সিদ্ধান্ত তো আবেগ দিয়ে নিলে চলবে না, সেটা ভালকরেই জানে বিসিসিআই। দলের জন্য ভাল হয় এরকম কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হলেও নিজেদের প্রফেশনালিজম দেখাতে চাচ্ছে বিসিসিআই।
তাছাড়া, বর্তমানে নিয়মিত অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা রোহিত শর্মাকে বাদ দিয়ে সূর্যকুমার যাদবের হাতে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দিয়ে নির্ভার কি থাকতে পারবে ভারত? যে প্রশ্নটা হয়তো বড় করে আসবে। যে প্রশ্নের বড় উত্তর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে সূর্যকুমারের। তবে, তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে পিছিয়ে পড়ে ব্যাকফুটে চলে গেছে ভারত। আর সিরিজ হারলে সূর্যকুমার যাদবের উপর আস্থার জায়গায় ঘাটতি তৈরি হতে পারে।
মূলত জাসওয়াভি জাসওয়াল, ঋতুরাজ গাইকাট, ঈশান কিশানদের মত তরুন উদীয়মান খেলোয়াড়রা দলে জায়গা নিতে পারছেন না রোহিত-কোহলীদের কারনে। অপরদিকে, রোহিত-কোহলীদের পারফরম্যান্সকে দলের জন্য কার্যকরী মনে না করায় তরুনদের দিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে চাচ্ছে বিসিসিআই। ভাল পারফরম্যান্স করেও দলে ঢুকতে না পারার যে আক্ষেপ তরুনদের মধ্যে তৈরি হয়েছে, তা দ্রুত ঘোঁচাতে চায় বিসিসিআই। তাছাড়াও, রিশাভ পান্থের মত এক্সাইটিং খেলোয়াড়ও ইনজুরি কাঁটিয়ে দলে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে।
তাছাড়া, প্রতিবছর আইপিএল থেকে বেশি কিছু খেলোয়াড় প্রায় প্রতিবছর বের হয়ে থাকে। আসন্ন আইপিএল থেকেও বেশি কিছু নতুন খেলোয়াড় পাওয়ার আশা আছে ভারতের। যার দীর্ঘদিন ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিচ্ছে। ফলে, এই মূহুর্তে দলে জায়গা তৈরি করতে রোহিত-কোহলীকে সরানো ছাড়া জায়গা দেখছে না বিসিসিআই। বিষয়টি হয়তো নিজেও ভাল করে উপলব্ধি করতে পারছে বিরাট কোহলী আর রোহিত শর্মা।
তবে, ক্রিকেট যাদের রক্তে মিশে আছে তারা কি সহজে সরতে চাইবে। ক্রিকেট যে আজকে যে ব্র্যান্ড ভেল্যু তৈরি করতে পেরেছে, এতে অনবদ্য অবদান তো রেখেছেন এই দুই মহারথীও। তবুও, একটা সময় এসেতো সবাইকে জায়গা ছাড়তেই হয়। যে বাস্তবতাকে মানিয়ে নিতে হয়েছে ক্রিকেট সব গ্রেটদেরকেও। তবে, বিরাট-রোহিতরাও তো রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। তাদেরও আবেগ থাকবে। তবে দিন শেষ মেনে নিতে হবে বাস্তবতার সব বাস্তবতা।
Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you.
I don’t think the title of your article matches the content lol. Just kidding, mainly because I had some doubts after reading the article.
I don’t think the title of your article matches the content lol. Just kidding, mainly because I had some doubts after reading the article.